সায়ন ঘোষ, বনগাঁ : দীর্ঘ ৮ মাস পর অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলান রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান শংকর আঢ্য। মঙ্গলবার দুপুরে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট জামিন মঞ্জুর করে শংকর আঢ্য সহ আরো ২ জনকে। বনগাঁয় ঘটনাটি জানা জানি হতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন প্রাক্তন পৌরপ্রধান শংকর আঢ্যের অনুগামীরা।
বুধবার মাঝ রাতে পরিবার সহ বনগাঁয় আসার পথে ১ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু হয় শংকর আঢ্যের অনুগামীদের জমায়েত। কেউ বাইকে, কেউ সাইকেলে আবার কেউ হাঁটতে হাঁটতে। কয়েক হাজার মানুষের জয় ধ্বনি দিতে দিতে নিয়ে যাওয়া হয় শংকর আঢ্যের শিমুলতলার বাড়িতে।
এদিন দুপুরে তাঁর নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেন শংকর আঢ্য। তিনি বলেন, "ঈশ্বরের উপর প্রথম থেকেই ভরসা ছিল। ঈশ্বর ছিল তাই দীর্ঘ ৮ মাস পর আমি নিজের মাতৃভূমি, বাড়িতে ফিরেছি।" যদিও রাজনৈতিক প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, "এখন একটু পারিবারিক মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই। এবং সাধারণ মানুষ হিসেবে।" দলের কারোর সাথেই এখনও কোনোরকম কথা হয়নি এমনটাই জানিয়েছেন বনগাঁর প্রাক্তন পৌরপ্রধান শংকর আঢ্য।
Bongaon artistes protest RG Kar Incident : তিলোত্তমার সুবিচারে বনগাঁর রাজপথে শিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ
উল্লেখ্য, জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখ রেশন দুর্নীতি মামলায় বনগাঁর প্রাক্তন পৌরপ্রধান শংকর আঢ্যেকে গ্রেফতার করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এছাড়াও রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে গতবছর প্রথমে ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ইডি। তাঁকে জেরা করে পাওয়া তথ্য ও নথির উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয় বিশ্বজিৎ দাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও শংকর আঢ্যকে। অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছিল ইডি। মঙ্গলবার ধৃতদের তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। যথাযথ প্রমাণ না মেলায় বাকিবুর রহমান, বিশ্বজিৎ দাস ও শংকর আঢ্যর জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, যথাযথ প্রমাণ ছাড়া কোনও মামলায় কাউকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা যায় না। এদিন আদালতে ওঠে সেই প্রসঙ্গ। সূত্রে জানা গিয়েছে, ইডি পর্যাপ্ত প্রমাণ দিতে পারেনি। এছড়াও দুর্নীতির টাকা ব্যবসায় ব্যবহার করা হয়েছে বলেও প্রমাণ মেলেনি। সেই কারণেই শংকর সহ দুইজনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, এদিন জামিনের খবর বনগাঁয় পৌঁছতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন শংকর আঢ্যের অনুগামীরা। মিষ্টিমুখের সাথে বাজি ফাঁটানোর মধ্যদিয়ে উৎসবে মাতেন তাঁরা।