শিক্ষক দিবসের পরিবর্তে যন্ত্রণা দিবস পালন

Celebrating-Suffering-Day-instead-of-Teachers-Day

পারিজা পাঠক, কলকাতা : শিক্ষক দিবসের দিনে এমন বিরল ঘটনা বড়ই নজিরবিহীন। বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে তথাকথিত শিক্ষক দিবস অর্থাৎ এই জীবন গড়ার কারিগররা যন্ত্রণা দিবস পালন করলেন গান্ধিমূর্তির সামনে।

শিক্ষক ' শব্দটি আকারে মাত্র তিন অক্ষরের হলেও এর প্রকাশ বহুদূর বিস্তৃত। পরামর্শদাতা, পথপ্রদর্শক অথবা অন্ধকার থেকে আলোর পথের যারা প্রদর্শক তারাই শিক্ষক। আর এই জীবন গড়ার কারিগরদের বিশেষ ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে যে এক বিশেষ দিন ধার্য করা হয়েছে সেটি শিক্ষক দিবস অর্থাৎ ৫ ই সেপ্টেম্বর নামে পরিচিত।প্রতিবছর এই দিনটিতে বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে এটি পালন করে থাকে।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও তার অন্যথা হলো না।কিন্তু এই দিনটিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এক বিরল ঘটনার সম্মুখীন হলো। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক দিবস পালনের সাথে দেখা গেলো গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্ণমঞ্চে বুকভরা ব্যথা আর চোখের জলকে সঙ্গী করেই শিক্ষক দিবস তথা যন্ত্রণা দিবস পালন করলেন নবম দশম এবং একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির হবু শিক্ষক শিক্ষিকা প্রার্থীগণ।

শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেধাতালিকা ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত হওয়া এই হবু শিক্ষক শিক্ষিকারা এমনই বেনামী শিক্ষক দিবস পালন করলেন। ৫ ই সেপটেম্বর এমন দুই রকম নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষ্য রইল গোটা বঙ্গবাসী। 

যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন, যে খুবই কষ্টে দিন অতিবাহিত করছে ধর্না রত প্রার্থীরা।প্রতিনিয়ত কাঠফাটা রদদূর্, ঝড় জলকে উপেক্ষা করেই নিজেদের অধিকার অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই রাজ্যের সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, খেটে খাওয়া পরিবারের সন্তান।সেই পরিবারগুলির স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। পরিবার গুলি তাদের জমি জায়গা, অলঙ্কার, ঘটি বাটি সর্বস্ব বিক্রি করে তাদের ছেলে মেয়েদের এম এ, বি এড, করিয়ে শিক্ষকতার জন্য প্রস্তুত করেছেন।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ক্রমাগত দুর্নীতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত পরিবার গুলির স্বপ্ন ভেঙে দিতে। তাদের চোখে মুখে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধর্না মঞ্চে নেই পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা,নেই মহিলা টয়লেটের ব্যবস্থা। এমনই কষ্টে দিন যাপন করছেন তারা। তাদের দাবি ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দিতেই হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post