সায়ন ঘোষ, বনগাঁ : আজ, বুধবার শ্রাবণ সংক্রান্তিতে বাংলার ঘরে মনসা পুজো করা হয়। আর এই মনসা পুজোকে নিয়ে রয়েছে সর্পদেবীর অবাক করা নানান কাহিনি।
অন্যদিকে কাঁটাতারের পাশেই দুই বাংলার সমাগমে আয়োজিত হয় মনসা পুজো। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বনগাঁ পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তের সংযোগস্থলে এপার বাংলা অর্থাৎ ভারত ও ওপার বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশ এর মানুষ মিশে গিয়ে বিএসএফ জওয়ানদের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় এই মনসা পুজো। যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।
যদিও কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের কারনে এবার বিএসএফ জওয়ানদের বদলে সমস্থ দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ব্যাবসায়ী সমিতি। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষ ভির জমায় পেট্রাপোল সীমান্তের ধারে হওয়া মনসা পুজো উপভোগ করতে। তবে দু'বছর করোনা পরিস্থিতির কারনে মনসা পুজোর জৌলুশ কিছুটা কমেছিল। বিএসএফ আধিকারিকদের নির্দেশে প্রবেশ নিষেধ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষদের। কিন্তু ভীড় কম থাকলেও বিএসএফ আধিকারিকদের নজরদারি চলে একই ভাবে।
উল্লেখ্য, অনেক বছর আগে বিএসএফ জওয়ান মেজর পাণ্ডে সাহেব কাঁটা তারের বেড়ার পাশ দিয়ে হঠাৎই দৌড়ে কয়েকজন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে ধরতে ক্যাম্প থেকে জঙ্গলের দিকে ছুটেছিলেন। কিন্তু আচমকায় জঙ্গলের মাঝে থমকে দাঁড়ালেন মেজর। কথিত আছে, সেসময় তিনি দেখতে পেয়েছিলেন মা মনসার পঞ্চমুখী রুপ। এক পা'ও সামনে এগোতে পারলেন না তিনি। সেদিনের মতো চুপ থাকলেও মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন, মা মনসার মন্দির নিজে হাতে তৈরি করবেন ওই স্থানেই। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। তৈরি হল মায়ের মন্দির। কালের স্রোতে ভক্তদের বিশ্বাস, ভক্তি আর দান-ধ্যানে মায়ের সেই জায়গা আজ রূপ নিয়েছে অপরূপ মন্দিরে। প্রতিবছরই এই সময় দুই বাংলার অসংখ্য মানুষ আসতেন নিয়ম করে৷ প্রায় পাঁচশো কড়াই খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ চলত সারাদিন ধরে।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কিছুটা কমলেও কেন্দ্রীয় সরকারের হস্থক্ষেপের কারনে বিএসএফ জওয়ানদের বদলে সমস্থ দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ব্যাবসায়ী সমিতি। বুধবার সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা ভির করেন। দর্শনার্থীদের জন্য প্রায় ৫০ কড়াই খিচুড়ি ভোগ রান্না করা হয় এদিন।
প্রসঙ্গত, বছরের প্রত্যেকটা দিন মায়ের মন্দিরের দেখ ভাল করেন সৌদামিনি বারুই ওরফে সবাই চেনেন তাঁকে পাগলি মা হিসেবে। তিনি বলেন "কখনও কখনও মন্দিরে এসে দেখি বিগ্রহে স্বয়ং মা জড়িয়ে থাকেন। চোখে না দেখলে তা বিশ্বাস করা যাবে না৷" তাই ভক্তি আর বিশ্বাসের দরজায় মাথা ঠুকতে প্রতি বছর শ্রাবণ সংক্রান্তির দিন আসেন ভক্তরা।