ভারতের জাতীয় পতাকার ইতিহাস
কলমে : নির্মল বিশ্বাস
ছবি : সায়ন ঘোষ। বিভূতিভূষণ বি.এড. কলেজ, বনগাঁ।
সময়টা ছিল ১৯৩১ সালের ১৩ এপ্রিল। সেদিন নাগপুর শহরে জালিয়ানওয়ালাবাগের নারকীয় হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেস এক মিছিলের আয়োজন করে। সেদিন একে একে স্বেচ্ছাসেবকরা ওই মিছিলে যোগদান করেন ও একটি পতাকা উত্তোলন করেন। ওই পতাকার নামকরণ করা হয় "স্বরাজ পতাকা"। সেই পতাকার উপর থেকে নীচে আছে গেরুয়া, সাদা এবং সবুজ রঙ। মাঝে সাদা রঙের উপর আঁকা হয়েছিল চরকা। সেই ১৯৩১ সালে সর্বসম্মতি ক্রমে ওই "স্বরাজ পতাকা"কে "জাতীয় পতাকা" হিসাবে গ্রহণ করেছিল কংগ্রেস।
ইতিমধ্যে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বছর। স্বাধীনতা ঘোষণার দিনক্ষণ প্রায় ঠিক। দেশের বরণ্য নেতারা স্বাধীনতা ঘোষণার আগেই তাঁরা এক আলোচনার মধ্যদিয় ঠিক করতে চান জাতীয় পতাকা রঙ কেমন হবে ? সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেদিন উপস্থিত নেতাদের মধ্যে ছিলেন রাজেন্দ্র প্রসাদ, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, সরোজিনী নাইডু, চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারী, কানাহইলাল মালেকলাল মুন্সী, এবং ভীমরাও আম্বেদকরের মতো দেশ বরেণ্য মানুষেরা।
এঁরাই সেদিন সিদ্ধান্ত নিলেন "স্বরাজ পতাকা" সামান্য পরিবর্তন করে গড়ে তোলা হল ভারতের নতুন জাতীয় পতাকা। দেশের সমস্ত মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য পতাকার মাঝের সাদা অংশে সম্রাট অশোকের প্রতীক চিহ্ন ধর্মচক্র বা অশোক চক্র নামে পরিচিত হল।
১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই ' কনস্টিটুয়েন্টে অ্যাসেম্বলি'র অধিবেশনে ঠিক হয় খাদি রেশম এবং খাদি কার্পাস তুলোর কাপড় দিয়ে তৈরি করে হাজির হয়ে যান জহরলাল নেহরু। সেদিন স্বীকৃতি পেয়ে যায় ভারতের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত রূপ।
স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি সগৌরবে উত্তোলন করা হয় সকলের সম্মানের সম্ভ্রমের অশোক চক্র আঁকা তেরঙ্গা ভারতের জাতীয় পতাকা।