নো টোবাকো ডে- এবারের থিম "পরিবেশ সুরক্ষা"

নো টোবাকো ডে- এবারের থিম "পরিবেশ সুরক্ষা"


অজয় মজুমদার

প্রতিবছর ৩১ শে মে  নো  টোবাকো ডে পালিত হয়৷  বার্ষিক উদযাপন জনগনকে তামাক ব্যবহারের বিপদ, তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক অনুশীলন, তামাক মহামারী মেকাবিলায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কি করেছে, এবং বিশ্ব জুড়ে মানুষ তাদের স্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন যাপনের অধিকার দাবী করতে এবং সুরক্ষার জন্য কী করতে পারে সে সম্পর্কে জনগনকে অবহিত করে৷ বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মকে৷

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র গুলি তামাক মহামারী এবং এর ফলে প্রতিরোধ মুক্ত মৃত্যু ও রোগের প্রতি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস তৈরী করে। ১৯৮৭ সালে, বিশ্বস্বাস্থ্য পরিষদ WHA40.38 রেজোলিউশন পাশ করে ৭ই এপ্রিল ১৯৮৮ সালে। এতে বিশ্ব ধূমপান মুক্ত দিবস পালন করার আহ্বান জানিয়ে ছিল। রেজোলিউশনে আরও বলা ছিল প্রতি ৩১শে মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উদযাপনের আহ্বান।

পরিবেশের উপর তামাক শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব ঃ

১. সিগারেট তৈরী করতে গাছ কাটা হয় 600,000,000

২ . কার্বন ডাই অক্সাইড বায়ুতে নির্গমন হয় 84,000,000 টন, যা বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ায় ৷

৩. সিগারেট তৈরী করতে 22000,000,00 টন জল ব্যবহার করা হয়। 

পরিবেশের উপর তামাক শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব বিশাল। এবং ক্রমবর্ধমান আমাদের গ্রহের ইতিমধ্যই দুস্প্রাপ্য সম্পদ এবং ভঙ্গুর ইকোসিস্টেমের উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ যোগ করেছে।

তামাক প্রতিবছর আট মিলিয়নের বেশি মানুষকে হত্যা করে এবং আমাদের পরিবেশকে ধ্বংস করে। মানুষের স্বাস্থ্যের আরও ক্ষতি করে, চাষবাস, উৎপাদন, বিতরন, ব্যবহার এবং ভোক্তা পরবর্তী বর্জ্যের মাধ্যমে৷

এই দিবসের থিম ঃ

১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছরই একটা করে থিম তৈরী করে টেরাকো দিবসকে পালন করা হয়। যেমন- ২০১৯ এর থিম ছিল- টোবাকো এন্ড লং হেলথ, ২০২১ ছিল- Commit to quit বা প্রস্থান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ , ২০২০তে বিশ্বব্যাপি কোভিডের সংক্রমনের জন্য কোন থিম তৈরী করা হয়নি ৷

পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব ঃ

তামাক চাষ উৎপাদন এবং রাসায়নিক পদার্থ, বিষক্ত বর্জ্য, মাইক্রোপ্লাস্টিক সহ সিগারেটের বাট এবং ই- সিগারেটের বর্জ্য নিয়ে আমাদের জল, মাটি, সমুদ্র সৈকত এবং শহরের রাস্তা গুলিতে বিষক্ত করে তোলে৷ তামাক শিল্পের টেকসই উদ্যোগকে অনুদানের মাধ্যমে তাদের পণ্য গুলিকে সবুজ ধোয়ার মাধ্যমে এবং পরিবেশগত  'মান' সম্পর্কে রিপোর্ট করার মাধ্যমে পরিবেশগত ক্ষতি থেকে, মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হন সে দিকে নজর দিতে হবে।

আমাদের গ্রহকে বাঁচাতে তামাক বর্জন ঃ

প্রতিটি ধুমপান বা তামাক পণ্য ব্যবহার করা মূল্যবান সম্পদের অপচয় করে, যার উপর আমাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে। আপনার স্বাস্থ্য এবং আমাদের গ্রহের স্বাস্থ্যের জন্য তামাক ত্যাগ করা খুব প্রয়োজন। তামাকের ধোঁয়া উচ্চবায়ু দূষনের অন্যতম কারন। এছাড়াও এতে তিন ধরনের গ্রীন হাউস গ্যাস থাকে' ৷

তামাক উৎপাদনকারিদের উপকারি ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করা  ঃ

সরকার এবং নীতি নির্ধারকদের উচিত তামাক চাষীদের বিকল্প এবং টেকসই জীবিকার দিকে উৎসাহিত করা৷ তামাক নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখার জন্য সহায়তা করা জরুরী।

কেন ধুমপান ক্ষতিকর  ঃ

ধুমপায়ীদের করোনা হত্তয়ার ঝুঁকি বেশি কারন তারা ক্রমাগত তাঁদের ঠোঁটে হাত রাখেন। করোনো দ্বারা ধুমপায়ীরা সংক্রমিত হলে, চট করে লাং ধরে ফেলে কারন এদের লাং বা ফুসফুস এমনিতেই দূর্বল থাকে। এদের ক্ষেতে জটিল এবং ঝুকি থাকে। এই ঝুকি কমাতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন শুরু করতে আজই ধুমপান বর্জন করা উচিত।

কি করে তামাক ছাড়াবেন  ঃ

১. বিলম্ব - যতক্ষন পারবেন নেশা বর্জন করুন ৷

২. নেশার প্রবল ইচ্ছা যখন তৈরী হরে তখন নিজেকে ভেতর থেকে শিথিল করতে ১০টি গভীর শ্বাস  নিন।

৩. জলপান করুন ,দেখবেন ধুমপান আটকানোর একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প।

৪. নিজেকে বিভ্রান্ত করার জন্য অন্য কিছু করুন | যেমন স্নান করুন ,বই পড়ুন, হাঁটতে যান , কিংবা গান শুনুন' ।

ই- সিগারেট  ঃ

এটি হল ইলেকট্রনিক নিকাটিন ডেলিভারি সিস্টেম ( ENDS) এবং ইলেকট্রনিক নন- নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ( ENNDS) এর সব থেকে সাধারন রূপ কিন্ত আমাদের আছে' যেমন ই- সিগা র , ই- পাইপ , ই- শিসা ইত্যাদি। একটি অ্যারোসেল তৈরী করার জন্য তরল যা সাধারনত নিকোটিন ধারন করে , যা ব্যবহারকারী শ্বাস নেয় ৷ অ্যারোসেলগুলিতে অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থও থাকে I যেমন ফর্মালডিহাইড যা একটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ এবং সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যারোসেলের সংস্পর্শে আসা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।

ENDS প্রায়ই সিগারেট ধূমপানের পরিপুরক হিসাবে ব্যবহার করা হয় এবং বিকল্প হিসাবে বিশেষ করে ধুমপান মুক্ত পরিবেশে i মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৭০% প্রাপ্ত বয়স্ক ENDS ব্যবহার কারীরাও বর্তমান সিগারেট গ্রহন করে ৷ সেখানে তরুনদের মধ্যে দ্বৈত ব্যবহার কারিরা শতাংশ কম , ৩৩% এই ভাবে , ENDS এবং সিগারেটের দ্বৈতব্যবহার নিকোটিন নির্ভরতা বজায় রাখে।

শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের দ্বারা ব্যবহৃত ই- সিগারেট ভয়ংকর বিপদজনক । নিকোটিন অত্যন্ত আসক্ত এবং মস্তিষ্কের বিকাশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে  পারে ৷

Post a Comment

Previous Post Next Post