বিশেষ নিবন্ধ
ফিরে দেখা আলো
অশোক কুমার হালদার
আলো আমাদের আছে, ছিল, তাই আলোর দেখা হয়। আলো মানে সুন্দর এবং চেতনা। মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রীয়ের মধ্যে আলো দেখার ইন্দ্রীয় মানুষের চোখ। আর চেতনা অনুভব করার ইন্দ্রীয় জ্ঞান চক্ষু। যদি চোখের আলো দেখার ক্ষমতা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর বা নিঃশেষ হয়ে যায়, তখন চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসে। আর একে বলে দৃষ্টিহীনতা। অর্থাৎ আলোর আর বিচ্ছুরন হ্য় না। চারিদিকে আঁধার নেমে আসে। অর্থাৎ দর্শন ইন্দ্রীয় আছে কিন্ত আলোর অভাবে বহিঃদর্শন হয় না। তখন চারিদিকে একরাশ আঁধার নেমে আসে। তখন জ্ঞান ইন্দ্রীয়ই একমাএ সহায় এবং সম্বল অনুভূতি। তখন তাল এবং বল, সোনা এবং তামার আর কোন পার্থক্য থাকে না। শুধুমাএ স্পর্শে দ্বারা বল এবং তাল কে জ্ঞান ইন্দ্রীয়র অনুভূতির দ্বারা পৃথক করা সম্ভবপর হতে পারে। কিন্তু সোনা এবং তামাকে কোন রকম ভাবেও পৃথক করা সম্ভবপর ন। আবার লাল ফুল না সাদা ফুল, তা পৃথক করা সম্ভবপর নয়- যদি চোখের আলো বা দৃষ্টি না থাকে। হয়ত ঘ্রাণ দ্বারা গোলাপ না চাঁপা ফুল পৃথক করা সম্ভবপর হতে পারে। স্বভাবতই বলা যেতে পারে দৃষ্টিহীনতার পূর্বেরদেখা বসন্তকাল এবং তার সৌন্দর্য্য মনন এবং দর্শন চেতনার অনুভূতি দ্বারা বিশ্লেষণ করা এক বস্তু আর দৃষ্টিহীনতার মধ্যে থেকে চেতনার অনুভূতির দ্বারা বস্তুকে বিশ্নেষণ করা আর এক বস্তু; তাতে কোন সন্দেহ নেই। চোখের দৃষ্ট বস্তু এবং পার্থিব বস্তুর মধ্যে একটি সেতু বন্ধনের মত কাজ করে। আর তার ফলে বস্তুর দর্শন চোখের দৃষ্টিতে এসে প্রতিফলিত হয় এবং তার ফলে ফিরে দেখা হয় আলোকে। তবে আলো দেখতে গেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি থাকতে হবে। বিভিন্ন কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ বা ক্ষীণতর হতে পারে। এটি শারীরবৃওীয় কারণ বা মানসিক কারণ। অথবা দুটো কারণই একই সঙ্গে একটি মানুষের মনের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। আধুনিক সভ্যতার কর্মচঞ্চল ও ব্যস্থতার কারণে চেতনার অনুভবের দৃষ্টি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে, চাষী আছে, চাষের জমি আছে, লাঙ্গল আছে এবং জমিতে চাষও হয়। কিন্তু উপযুক্ত ফসল জমি থেকে উৎপন্ন হয় না। এ ব্যপারে চাষী যখন কারণ অনুসন্ধান করে এবং জানতে পারে যে, তার কর্মের মধ্যে কোন দোষ নেই, দোষ তার জমিতে। কারণ, তার চাষের জমি অর্নুবর। অর্থাৎ বন্ধ্যা। আর তার কারণেই আশানুরূপ ফসল হয় না। এটিও এক ধরনের ফিরে দেখা। তবে হ্যাঁ, এটি চেতনার আলোতে দেখা।