মনোনয়নপত্র জমা করে বাইরে
সাংবাদিকদের সামনে কংগ্রেসের প্রার্থী ঋতুপর্ণা আঢ্য ও মলয় আঢ্য। ছবি : উৎপল মল্লিক
সৌম্যদীপ মল্লিক : পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই দিকে দিকে প্রার্থী বদলের দাবীতে সোচ্চার হয় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। তার ব্যতিক্রম হয়নি বনগাঁ পৌরসভাতেও। একাধিক ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলের দাবীতে লাগাতার মিছিল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু অবশেষে আজ বনগাঁর ২২টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের পূর্ব নির্ধারিত প্রার্থীরাই মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। তবে তার পাশাপাশি উঠে এল একাধিক ‘গোঁজ’ প্রার্থীর নামও। কেউ বিক্ষুব্ধ, আবার কেউ বলছেন, ‘দলের টিকিট পাইনি তাই নির্দলে দাঁড়িয়েছি। আমরা দলের সঙ্গেই আছি’।
বনগাঁয় কংগ্রেস প্রার্থী প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যর মেয়ে ও ভাই, প্রচারে তৃণমূল কর্মীরাই
এসবের মধ্যে আবার ভিন্ন ছবি উঠে এল বনগাঁর আঢ্য বাড়িতে। বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তণ চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আঢ্য তৃণমূলের টিকিটে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে দাঁড়ালেও তার মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্য কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়েছেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এছাড়াও বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের ভাই মলয় আঢ্যও এবারে ভোটে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের টিকিটে, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বনগাঁ রাজনৈতিক মহলে।
বাবা, মা তৃণমূলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, অথচ কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়ানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ঋতুপর্ণা আঢ্য বলেন, ‘আমার দাদু কংগ্রেস করতেন৷ আমি দাদুর আদর্শ নিয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছি এবং প্রার্থী হয়েছি।’ তার জেতার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল প্রার্থীকে চিনি না। আমি জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।' অন্যদিকে মলয়বাবু বলেন, “আমার বাবা প্রয়াত হারাধন আঢ্য কংগ্রেস করতেন। সে কারণে আমি কংগ্রেস থেকে দাঁড়িয়েছি। কে কোন দল থেকে ভোটে দাঁড়াবে, সেটা তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার।"
BONGAON MUNICIPAL ELECTION : বনগাঁয় এবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বিজেপির
এদিকে বাড়ির তিনজন সদস্য মনোনয়নপত্র জমা করতে আসলেও দেখা মেলেনি প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের। এমনকি তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যের মনোনয়নপত্র জমা করতে আসার সময়ও ছিল অনাড়ম্বর। সেখানে বারংবার উঠে আসছে প্রার্থী বদল ও শঙ্কর আঢ্যকে প্রার্থী করার দাবী। যদিও এদিন শঙ্করবাবু বলেন, ‘মেয়ে এবং ভাই দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের সিদ্ধান্তে আমি হস্তক্ষেপ করবো কেন? মেয়ে জানিয়েছিল, সে তার দাদুর আদর্শ মেনে কংগ্রেসে দাঁড়াতে চায়’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো দলের কোন পদে নেই। শুধু একজন সাধারণ কর্মী মাত্র’।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১০ ফেব্রুয়ারী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে এবং ১২ ফেব্রুয়ারী মনোনয়ন তুলে নেওয়ার শেষ দিন। তবে এই সময়ের মধ্যে বনগাঁর রাজনীতিতে আবার নতুন কোন মোড় নেয় কিনা এখন সেটাই দেখার।
সুত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত বনগাঁর পৌর নির্বাচনে মোট ১০জন নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ১১টি আসনে, বামেদের পক্ষ থেকে ২০টি এবং তৃণমূল ও বিজেপির পক্ষ থেকে ২২টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।