ঈশিতা সাহা : আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। যে ভাষা আমাদের গর্ব, ভালোবাসা ও স্নেহর আলোয় জর্জরিত, সেই ভাষারই উদযাপনের দিনটি হল আজ।বাংলাদেশে বহু মানুষ তাদের মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাদের সকলকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে আজ পেট্রাপোল সীমান্তে পালিত হল ভাষা শহীদ দিবস।
বনগাঁর ৯ জন সহ উত্তর ২৪ পরগণা জেলার ৬১ জনকে বহিষ্কার করল তৃণমূল কংগ্রেস
মোদের গর্ব মোদের আশা, আহা মরি বাংলা ভাষা। প্রতিবছর এই দিনটিতে দুপারের ভাষা প্রেমী মানুষেরা দেশভাগের কাঁটাতার উপেক্ষা করে একত্রিত হন। নোম্যান্সল্যান্ডে শহীদ বেদীতে মালাদান করে, দু'দেশের যৌথ উদ্যোগে নোম্যান্সল্যান্ডে চলে যৌথ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে এবার করনা পরিস্থিতি কারণে ব্যতিক্রম ঘটলো কিছুটা। দু'দেশে আলাদা আলাদা ভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হলো আজকের দিনটি।
কোভিড প্রটোকল এবং প্রশাসনিক নির্দেশে এবছর দুপারের দু'দেশের মানুষ মিলিত হয়ে দিনটি উদযাপন করতে পারলেন না। কিন্তু ভিন্নভাবে ভারত-বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হচ্ছে।
এদিন সকালে ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েত -এর পক্ষ থেকে পেট্রাপোল সীমান্তে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নিয়েছেন নোম্যান্সল্যান্ডে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, দলনেত্রী আলোরানী সরকার, ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষসহ জনপ্রতিনিধিরা। পাশাপাশি বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিরাও আসেন। সকলেই মালা ও মিষ্টি নিয়ে উপস্থিত হন। শহীদ বেদীতে যৌথভাবে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে মাল্যদান করেন তারা।
আরও চীনের আধিপত্য একধাপ এগিয়ে বৃদ্ধি; এবার বাণিজ্যিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ভারত
আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিতকারী জন প্রতিনিধিগন জানান, "২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ও অনুপ্রেরণায় ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে আন্তর্জাতিক শহীদ ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। ভাষা দিবসের উদযাপন অনুষ্ঠান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও এ দেশের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে এক অটুট সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করে। যার ফলস্বরূপ প্রতি বছর এই দিনটিতে দুই দেশ একত্রিত হন। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি কারণে এই বছরটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। তবুও দু'দেশ একই সাথে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ শহীদদের যারা আমাদের ভাষার জন্য রক্ত ঝরিয়েছেন'।"
বাংলাদেশের সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিন বলেন, "২০১১ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে আমরা দুই বাংলা একত্রিত হয়ে নোম্যান্সল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকি। আমরা ধন্যবাদ জানাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ভাষার টানে আমরা একত্রিত হই কিন্তু এবছর আমরা একত্রিত হতে পারলাম না। আশা রাখবো আগামীতে আবার দুই বাংলা একত্রিত হয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করতে পারবে এবং ভারত সরকারের কাছে আমরা একটি আবেদন রাখছি ২১ শে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের জন্য ভারত সরকার একটি জায়গার ব্যবস্থা করুক যেখানে দুই দেশের নাগরিক একত্রিত হয়ে অনুষ্ঠান করতে পারি"।