ঈশিতা সাহা: মায়ের সঙ্গে ছেলের বচসা, সেখান থেকে হাতাহাতি। অবশেষে শ্বাসরোধ করে খুন মাকে। এতেই শেষ নয়, মৃত ঢিপির ওপরেই দীর্ঘ দুই বছর ধরে বসবাস করছিল ছেলে।
মঙ্গলবার বর্ধমান জেলায় ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে যায় এলাকায়। বর্ধমান জেলার হটুদেওয়ান পিরতলা ক্যানেল পাড় এলাকার বাসিন্দা ছিলেন মৃত মহিলা (সুকরানা বিবি)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মা সুকরানা বিবির ঘুরতে যাওয়ার নেশা ছিল। মাঝেমধ্যেই কাউকে না বলে বেরিয়ে পড়তেন বাড়ির বাইরে। বিষয়টি নিয়ে মায়ের ওপর একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছোট ছেলে শেখ নয়ন আলী। মায়ের আচরণে প্রায় তাদের মধ্যে বিবাদ হত। এরপরই একদিন বাচসা চরমে উঠলে ছেলে নয়ন মায়ের মাথায় আঘাত করে। তারপর তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির ভয়ে সেদিনই মাঝ রাতে ঘরের মাটি খুঁড়ে নিজের মাকে পুতে দেয় নয়ন। সন্দেহ থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সেই ঢিপির ওপর ধুপ জালাতো সে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সুকরানা বিবি ও তার ছোট ছেলে নয়ন আলি এক সঙ্গেই থাকতেন। হঠাৎ করে ২০১৯ সালে জানুয়ারি মাস থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সুকরানা বিবি। নিখোঁজের ছয় মাস পর নয়ন বিয়ে করে। যদিও খুনের বিষয়টি নয়নের স্ত্রী প্রথম ফাঁস করেছিলেন। তার অভিযোগ, বিয়ের পর একাধিকবার নয়ন তাকে মারধর করতো। তখনই নয়নের মুখে মাকে খুন করে মাটিতে পুতে দেওয়ার হুমকি শোনেন তিনি। এরপর প্রাণভয়ে ভাতার থানার এরুয়ারে বাপের বাড়িতে চলে আসেন।
এদিকে ভাই ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ মেটাতে নয়নের দাদা কিসমত আলি সোমবার এরুয়াতে যান। আর তখনই ভাইয়ের স্ত্রীর মুখ থেকে জানতে পারেন, নয়ন তার মাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে রেখেছে। পরে মঙ্গলবার সকলের জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন ভেঙে পড়ে বলেন, তিনি মাকে খুন করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছেন। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার পুলিশ নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার করেন। ইতিমধ্যে ঘরের মেঝে খুঁড়ে মৃতদেহ উদ্ধারে চেষ্টা করছে পুলিশ।