মশা এবং মাছি জীবাণুদের আশ্রয়৷ আর মানুষের দেহে তার মাধ্যমেই নানা রকম রোগ ছড়ায়। ম্যালেরিয়ার মূল শত্রু হলো প্লাজমোডিয়াম গনের একটি আদ্যপ্রাণী বা প্রোটোজোয়া৷ এটি একটি সংক্রামিত স্ত্রী মশার (অ্যানোফিলিস মশা ) কামড়ের সাথে শুরু হয় প্রতিক্রিয়া৷ লালারসের মাধ্যমে মশার সংবহন তন্ত্রে প্রবেশ করে এবং শেষে যকৃতে পৌঁছায়৷ সেখানে ওই প্রোটোজোয়া গুলি পরিপক্ক হয় এবং বংশ বৃদ্ধি করে৷এক সময় মানুষ মনে করত দূষিত বায়ু সেবন করলে এ রোগ হয়৷ এই রোগ সাধারণত ক্রান্তীয় অঞ্চল উপ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ,সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, বিষুবরেখা ঘিরে এই রোগের বিস্তার ৷ শুধু ২০১৮ সালে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুহার ৪০৫,০০০ জন৷ বেশিরভাগ ম্যালেরিয়ার মৃত্যুর কারণ হলো-- প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম , প্লাসমোডিয়াম ভাইভস্ক, প্লাসমোডিয়াম ওভাল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে জুনাটিক প্রজাতি প্লাজমোডিয়াম ওভাল এবং প্লাসমোড একটি ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ঘটায় ,যা মানুষের মৃত্যু ঘটায় না৷ প্লাসমোডিয়াম নলসাই জীবানু একজাতের ছোট লেজওয়ালা বাঁদরদের সংক্রমণ ঘটায় ৷
ম্যালেরিয়া সাধারণত ব্ল্যাড ফিলম ব্যবহার করে রক্তের অনুবীক্ষণ পরীক্ষা অথবা অ্যান্টিজেন ভিত্তিক দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ করা যায়৷ আধুনিক প্রযুক্তিতে প্যারাসাইট এর ডিএনএ শনাক্ত করার জন্য পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়ায় ব্যবহার উন্নত করা হয়েছে৷ ২০১০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুমানিক ২১৯ বিলিয়ান ম্যালেরিয়া ঘটার স্থলসমূহ নথিভুক্ত করেছে৷ সেই বছরই ৬ ,৬০ ,o০০ থেকে ১. ২ মিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়া রোগে মারা যায়৷ যাদের অধিকাংশ ছিল আফ্রিকার শিশু৷ ২০১o সালে ৯৯টি দেশের একটি রিপোর্ট অনুসারে ম্যালেরিয়া সংক্রমনের কারণে ১ ,o৬ ,৮২০ জনের মৃত্যু হয়৷ ম্যালেরিয়া সাধারনত দারিদ্রতার সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি প্রধান বাধা হতে পারে৷ প্রত্যেক বছর এই রোগাক্রান্ত হল প্রায় ৫১.৫ কোটি মানুষ ।
রাজ্যে একদিনে কোভিডে আক্রান্ত সংখ্যা ৭০১ জন, উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য দপ্তরে
কুইনাইন
অথবা আর্টিমেসিনিন গ্রুপের ম্যালেরিয়া
প্রতিরোধ ওষুধ দিয়ে এই
রোগ চিকিৎসা করা হয়।
প্রতিবছর প্রচুর গরীব মানুষ
এই রোগে মারা যায়৷ কিন্তু এই রোগ
নিয়ে করোনার মতো
এতো হৈ চৈ নেই৷
একটি কোম্পানি ম্যালেরিয়া চিকিৎসার জন্য ছোট্ট একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন৷ বলা হচ্ছে , এই যন্ত্রটি দিয়ে ম্যালেরিয়ার জীবাণুর জিনবিন্যাস বা জিনোম সিকোয়েন্স করা যেতে পারে।
এ থেকে চিকিৎসকেরা খুব তাড়াতাড়ি রোগী কোন ধরনের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন সেটা জানতে পারছেন। ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে প্রতিবছর 5 লক্ষ লোকের মৃত্যু হয়৷ মশা এই ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে৷ এই জীবাণুতে রয়েছে নানা ধরনের প্রজাতি৷ কোনো কোনোটি আবার ওষুধ প্রতিরোধী। অক্সফোর্ড ন্যানোপোর নামের একটি কোম্পানির গবেষণা গবেষকরা এমন একটি মোবাইলের মতো যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন যা দিয়ে ম্যালেরিয়ার জীবাণুটি কোন প্রজাতির সেটা জানা যাবে৷ যন্ত্রটির নাম মিনায়ন৷ দেখতে মোবাইল ফোনের মত৷ গবেষকরা বলেছেন এই যন্ত্রের সাহায্যে ডি এন এ -র প্যাটার্ন সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়৷
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উওকাতা সুজুকি বলেছেন মিনায়ন সিকোয়েন্মের ভালো দিক হলো-- এর মাধ্যমে গ্রীষ্মমণ্ডলী এলাকায় যেসব রোগ হয় অর্থাৎ ট্রপিক্যাল ডিজিজ -- সেখানে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যাবে৷ বিশেষ করে রোগী যখন খুব মারাত্মক জীবাণুতে বা সংক্রমণ রোগে আক্রান্ত হয় তখন তার আর সময় নষ্ট করা চলে না৷ ডিএনএ বিশ্লেষণ এর কাজ বিজ্ঞানীরা শুরু করছেন৷ ম্যালেরিয়া জীবাণু যক্ষার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া এবং ডেঙ্গির ভাইরাস নিয়ে৷ বিজ্ঞানীরা দেখেছেন অল্পসময়ের মধ্যেই এর সাহায্যে তথ্য পাওয়া সম্ভব ৷
‘হিট এন্ড রান’ মামলায় মৃত্যুর জন্য 2 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার
এই যন্ত্রটিকে যুক্ত করা হয় ল্যাপটপের সঙ্গে৷ 'তারপর এই সিকুয়েন্সের থেকে তথ্য ল্যাপটপে নিয়ে ডিএনএর বিশ্লেষণ করে দেখা হয়৷ এভাবেই রোগ নিরাময়ের পক্ষে ডাক্তাররা কাজ করেন। কিন্তু করোনায় এই ধরনের কোন প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়নি৷ বিশ্বজুড়ে শুধু এই রোগের ব্যপকতা নিয়ে প্রচার৷