বিশেষ রচনা : দাস প্রথা বিবর্তনের অন্যতম ধারা

বিশেষ রচনা

Special-essay-Slavery-is-one-of-the-trends-in-evolution

দাস প্রথা  বিবর্তনের অন্যতম ধারা

অজয় মজুমদার

➤ সবলদের অত্যাচার চিরদিনই সমাজে ছিল৷ সে আর্থিক কিংবা দৈহিক যাই হোক না কেন। সেই অত্যাচার একদিন পরিণত হয়েছিল দাস ব্যবসায়৷ এই ব্যবসা প্রথম শুরু হয় আফ্রিকার আদিবাসীদের মধ্যে৷ ৮০০ খ্রিস্টাব্দের ভেতরে আরব ব্যবসায়ীরা ইউরোপ মধ্যপ্রাচ্য এবং চিনে এই ব্যবসার প্রসার লাভ করে৷মধ্যযুগের ভেনিসে কৃষ্ণাঙ্গ গন্ডেলা- মাঝি ছিল এবং ষোড়শ শতাব্দী মধ্যেই লিসবনে প্রতি ১০জনের একজন ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ৷ দাস ব্যবসার প্রধান অভিমুখ ছিল নতুন আবিষ্কৃত হওয়া আমেরিকা৷ প্রায় এক কোটি ৫০ লক্ষ আফ্রিকাবাসীকে জাহাজে করে আমেরিকাতে পাচার করা হয়৷ সেজন্য বলা যেতেই পারে আজকের কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের আদি বাসস্থান ছিল আফ্রিকা৷

আফ্রিকার অনেক মানুষের শরীরের লাল রক্ত হিমোগ্লোবিনের একটা অস্বাভাবিক গঠন ছিল৷ এর প্রধান কারণ পরিব্যক্তি বা মিউটেশন৷ তার ফলে অ্যামাইনো অ্যাসিড গুলি অনুগঠনের গরমিল হয়ে গেছে৷ আর এই পরিব্যক্তি হওয়া অপগঠন সিকিল সেল বা কাস্তে কোশ  তৈরি করেছে। আর সেটাই এই জাতি জনগোষ্ঠীকে ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা করে৷ যেসব শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের রক্তে সিকিল সেল থাকে, তাদের পূর্বপুরুষের জীবনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে ,কেউ-না-কেউ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ছিলেন৷ যুক্তরাষ্ট্র ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণের ফলে।

প্রবন্ধ : প্রথম মহাকাশ ভ্রমণে ঘুরে এলেন রিচার্ড ব্রানসন

যদিও এই বংশানু ক্ষমতায় ভূমিকা অদৃশ্য রয়েছে৷ তবুও হাজার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান তাদের অতীতের অবাঞ্ছিত স্মৃতি রুপে এই বংশানু বহন করে।

সেদিন পর্যন্ত মানুষ এইটুকু জেনে ছিল –তা হল আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অনেকের দেহ থেকে সিকিল সেল বা কাস্থে কোশ হিমোগ্লোবিন বংশানুর একটা প্রতিলিপি আছে৷ এটাই প্রমাণ করে যে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানরা পশ্চিম আফ্রিকা থেকে এসেছিলেন৷ যা ইতিহাস থেকে আমরা আগেই জেনেছিলাম৷ আণবিক জীববিজ্ঞান এর সাহায্যে হিমোগ্লোবিন বংশানুকে ঘিরে যে ডিএনএ তাতে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বিপুল পরিমাণ রূপভেদ আবিষ্কৃত হয়েছে৷ আফ্রিকার বহু মানুষের জেনেটিক ম্যাপ ডিএনএ অক্ষরের বিবর্তন নিয়ে গবেষণা হয়েছে৷ স্থান থেকে স্থানান্তরে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পরিবর্তন হয়৷ সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া এবং জাইরোতে সিকিল সেল থেকে মিউটিশান হওয়ার ফলে ডিএনএ-র বিভিন্ন রূপভেদ ঘটে।

প্রবন্ধ : বছরে পাঁচ লক্ষ রোগী ম্যালেরিয়া রোগে মারা যায় কিন্তু করোনার মতো হৈ চৈ নেই

অ্যালেক্স হেলি- র অনেক পূর্বপুরুষ সম্ভবত কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন না। একটি বিশেষ রক্তের শ্রেণীর৷ এই শ্রেনীর নাম হল ডাফি। এতে একটি নির্দিষ্ট আফ্রিকান রূপ আছে। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ এর সমীক্ষা গুলি থেকে দেখা যায় তাদের এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত ডাফি বংশানুর শ্বেতাঙ্গ উদ্ভূত৷ এর কারণ হয়তো ক্রীতদাস যুগে জাতিতে জাতিতে যৌন মিলন। এ জাতি সম্পর্ক গোপন হলেও ব্যাপক ছিল৷ এমনকি প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন ও নাকি ক্রীতদাসী রক্ষিতা শালী গেমিং এর গর্ভে কয়েকটি সন্তান উৎপাদন করেছিলেন৷এই জৈব মিশ্রণ ঘটে ছিল উভয়ের মধ্যে , এবং যারা নিজেদের শ্বেতাঙ্গ বলে পরিচয় দেন ও গর্ববোধ করেন। সেইসব আমেরিকানদের মধ্যেও আফ্রিকান ডাফি বংশানু রয়েছে৷

গল্প : ঝাপসা মানুষ   --   দেবাশিস রায়চৌধুরী

জিন এরই মধ্যে আমাদের কয়েক শতাব্দী পিছনে ফেলে গেছে -কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের ক্ষেত্রে তো একেবারে ১৫ পুরুষ পিছনে৷ অনেক মানুষের  জীবাষ্ম থেকে ডিএনএর অনেক টুকরো পাওয়া গেছে৷ তার দেহের ভেতর অনেকগুলি-- প্রায় পানেরো হাজার বছরের পুরনো একটি অস্ট্রেলীয় মাথার খুলি পাওয়া গেছে৷ শীঘ্রই পূর্বপুরুষের বংশানু কে প্রত্যক্ষ ভাবে পাঠ করা এবং আজকের দিনে একই স্থানে যে গুলি আছে সেগুলির সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব হবে। দাসপ্রথার মধ্যে দিয়েই আদিবাসীদের বিবর্তনের ধারা চলে আসছে। তবে কেনই বা শ্বেতাঙ্গ কৃষ্ণাঙ্গ নিয়ে হানাহানি৷ বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে বংশগতির সূত্র ও মিউটেশনের সাহায্যেই আমেরিকানদের বিবর্তন।

Special-essay-Slavery-is-one-of-the-trends-in-evolution

Special-essay-Slavery-is-one-of-the-trends-in-evolution

Special-essay-Slavery-is-one-of-the-trends-in-evolution

Special-essay-Slavery-is-one-of-the-trends-in-evolution

Special-essay-Slavery-is-one-of-the-trends-in-evolution


Post a Comment

Previous Post Next Post