সায়ন ঘোষ : রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে শুরু হয়েছিল জোর জল্পনা। তাহলে কী সেই জল্পনার ইতি টানলো কেন্দ্রীয় বিজেপি? ২১ এর ভোটের আগেই সময় মতো সিএএ চালু করা নিয়ে বিজেপি উচ্চবাচ্য না করায় প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করে সরব হয়েছিল শান্তনু ঠাকুর। এরপর অনেক রাজনৈতিক সমাবেশেও দেখা যায়নি তাঁকে। তৃণমূলে যাওয়া নিয়ে একের পর এক জল্পনার সৃষ্টি হয়েছিল তাঁকে নিয়ে। তা সত্যেও কীভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের তালিকায় উঠে আসলেন শান্তনু ঠাকুর? যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, বিধানসভা ভোটে ১৯ এর লোকসভা ভোটের মতোই মতুয়া ভোটকে পাখির চোখ করেছিল বিজেপি। তবে রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবির পর শান্তনু ঠাকুরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা উঠতেই এমন সিদ্ধান্ত কেন্ত্রীয় বিজেপির।
বুধবার বিকেলেই রদবদল হয় কেন্ত্রীয় মন্ত্রীসভার। প্রধানমন্ত্রীর
দপ্তর থেকে কারা ডাক পেলেন বাংলা থেকে ৭২ ঘন্টায়
সেই নিয়ে চলছিল জল্পনা। অবশেষে বাংলা থেকে ৪ জন হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং
তাঁদের মধ্যে আছেন সংসদ শান্তনু ঠাকুরও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সম্ভাবনার তালিকায় সংসদ
শান্তনু ঠাকুরের নাম উঠে আসতেই শুরু হয়েছিল বিভিন্ন সমালোচনা। অবশেষে বুধবার কেন্দ্র
থেকে জলপথ, জাহাজ ও বন্দর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় শান্তনু ঠাকুরকে।
শান্তনু ঠাকুর মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। ১৯
এর লোকসভা ভোটে বিজেপির টিকিট পেয়ে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়ে সংসদ হয়েছিলেন তিনি এবং
১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া সম্প্রদায় থেকে বিপুল সংখ্যক ভোটও পেয়েছিল বিজেপি।
তবে পরবর্তী সময়ে এনআরসি, সিএএ এর কারণে মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ জমা হয়েছে। মূলত তা
দূর করার চেষ্টার জন্যেই এমন সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় বিজেপি।
প্রসঙ্গত, মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তনের দিনই
বনগাঁয় দিলীপ ঘোষের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তিন বিধায়ক। যাদের মধ্যে ছিলেন ক্ষোদ
শান্তনু ঠাকুর। তাতেই জল্পনা বেড়েছিল আরো। বিজেপি'র ২১ এর বিধানসভা
ভোটে ভরাডুবির পর হাতছাড়া হতে পারেন শান্তনু ঠাকুর, এমনটাই মনে করেছিলেন অনেকে। তাহলে
কী কেন্দ্রীয় বিজেপি, এই পরিস্থিতে তাঁকে কেবিনেট মন্ত্রীর আসনে বসিয়ে এক ঢিলে দুই
পাখি মারল? অবশ্যই প্রথমটি, শান্ত করা হল শান্তনু ঠাকুরকে। এবং দ্বিতীয়টি হল, মতুয়া
সম্প্রদায়ের মন জয়ের জন্যই বেছে নেওয়া হল শান্তনু ঠাকুরকে।
শান্তনু ঠাকুর মন্ত্রী হবার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের
প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন সংসদ মমতা বালা ঠাকুর বলেন, “মানুষের মধ্যে যে আশা আকাঙ্ক্ষা
ছিল সেটা শান্তনু ঠাকুর মেটাতে পারেনি, তিনি
যদি সংসদের চেয়ারে বসে কাজই না করতে পারেন তবে কেন্ত্রীয় মন্ত্রী হয়ে কী করবেন? ব্যাক্তিগত
ভাবে হয়তো লাভ হবে শান্তনুর, তবে মতুয়াদের কোনো লাভ হবে বলে মনে হয়না”।
ভারতীয় মতুয়া সংঘের নদীয়া উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক অনিমেশ বালা বলেন, "আমাদের আন্দোলন এর জায়গা আরো শক্তিশালী হল। নাগরিকত্ব পাওয়ার যে আন্দোলন তার এক ধাপ উপরে এগোলাম আমরা।"