শ্রমণ দে : মাত্র ১১ বছর বয়সে স্বপ্ন দেখেছিলেন অলিম্পিক্সে সোনা জেতার। ২০০৫ সালে নিজের হাতে আঁকা একটি ছবি দেখিয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যমকে। সেখানে দেখা যাচ্ছে লন্ডন অলিম্পিক্সে ১০ মিটার ডাইভিং বোর্ডের উপর তিনি, টম ড্যালে। তখনও সাত বছর বাকি লন্ডন অলিম্পিক্সের। বলেছিলেন, “অলিম্পিক্সে সোনা জিততে চাই।” টোকিয়োয় এসে স্বপ্ন সফল টমের।
তবে টমের প্রথম অলিম্পিক্স কিন্তু লন্ডন নয়, বেজিং অলিম্পিক্সে কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে নেমেছিলেন তিনি। পদক জিততে পারেননি সে বার। যাওয়ার আগে অবশ্য টম বলেছিলেন, “বেজিং যাচ্ছি অভিজ্ঞতার জন্য। অলিম্পিক্স কেমন সেটা বুঝতে যাচ্ছি।”
সরকারের তরফে মিড ডে মিল তালিকার পরিবর্তন
লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। স্থির দৃষ্টি ছিল অলিম্পিক্সের সোনার পদকের দিকে। লন্ডনে ব্রোঞ্জ, রিওতেও ব্রোঞ্জ। ২৭ বছরের ডাইভার টমের কাছে টোকিয়োই ছিল যেন শেষ আশা। ১১ বছর বয়সে দেখা স্বপ্ন সত্যি হল ১৬ বছর পর।
সোনার পদক নিতে উঠে কেঁদে ফেলেছিলেন টম। মনে মনে প্রতি দিন যে স্বপ্নটা দেখছিলেন, এত বছর পর তা ছুঁতে পারলেন তিনি। চোখের জল আটকাতে পারেননি ইংরেজ ডাইভার।
চকলেটের প্রলোভনে ডেকে এনে শিশুকে ধর্ষণ, উত্তপ্ত হাওড়ার ডোমজুড়
আসলে শুধু পদক জয়ের লড়াই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও নানা লড়াই করতে হয়েছে টমকে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবাকে হারাতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই তাঁকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা হত স্কুলে। তিনি সমকামী, এই পরিচয় প্রকাশ করতে পেরেছিলেন ১৯ বছর বয়সে।
সমকামী খেলোয়াড়দের আদর্শ টম। তবে ছোটবেলা থেকে নিজে যেমন স্থির লক্ষ্যে এগিয়েছেন, একেবারেই চান না নিজের সন্তানও তেমন ভাবে এগিয়ে যাক। টম বলেন, “আমার সন্তান যদি ছোট বয়স থেকে আমার মতো কথা বলে, তা হলে আমি বলব, ‘ধীরে চলো। সময় নাও, উপভোগ করো।”
দূরত্ব মেনে মাঠে বসেই ইউনিট টেস্ট দিচ্ছে পড়ুয়ারা
চতুর্থ অলিম্পিক্স খেলতে নামা টম মনে করেছিলেন রিও-তেই সোনার পদক পাবেন। তিনি বলেন, “রিও-তেই পদক জিতব ভেবেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। মনে হয়েছিল পৃথিবীটাই শেষ হয়ে গেল আমার। তবে এখন আমার কাছে পৃথিবী মানে আমার পরিবার। আমার স্বামী বুঝিয়ে ছিলেন যে কিছুই শেষ হয়ে যায়নি। তবে সেই সময় যদিও জানতাম না যে আমার সন্তান দেখবে আমার সোনাজয়। সেই জন্যই হয়তো এত দিন সোনার পদক জিততে পারিনি। এর চেয়ে আনন্দের কিছু হতে পারে না।”
টিকা নিয়েও গত ১৩ মাসে তিনবার করোনা আক্রান্ত হলেন চিকিৎসক
বেজিংয়ের ‘বেবি ড্যালে’ পদক জিততে না পারলেও মন জিতে নিয়েছিল সকলের। টমের স্মৃতি যদিও খুব মধুর নয়। তিনি বলেন, “আমার স্কুলের কিছু বন্ধু খুশি হয়েছিল। কিন্তু কেউ কেউ খুব খারাপ ব্যবহার করেছিল। নিজেকে খুব ছোট মনে হয়েছিল। বেশ কিছু সময় আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু আমার অনুশীলনে প্রভাব ফেলছিল এটা। কারও সঙ্গে ডাইভিং নিয়ে কথাই বলতে পারছিলাম না।”