বাড়িয়ে-চড়িয়ে টাকা আদায় দ্বাদশ শ্রেণীর ভর্তিতে

 

বাড়িয়ে-চড়িয়ে টাকা আদায় দ্বাদশ শ্রেণীর ভর্তিতে

ঈশিতা সাহা : করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের কথা মাথায় রেখেই সরকার নিয়মানুযায়ী, দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ২৪০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু নিয়ম মানছে না একাধিক স্কুলগুলি। সরকারি অংকের সাথে নিজের ইচ্ছে মত আরো অন্যান্য ফি জুড়ে দিয়ে বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে।

ঘটনায় কোচবিহারের বেশ কয়েকটি নামকরা স্কুললের কথা উঠে আসে। করোনা  পরিস্থিতিতে যেখানে তিনবেলা ভাত এর যোগান ও  কঠিন সেই সময় একাধিক স্কুল গুলির এই আচরণে অভিভাবক সহ শিক্ষক সংগঠনগুলিও ক্ষোভ দেখায়।

কোচবিহার শহরের রামভোলা হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ভর্তির জন্য ৬০০ টাকা, মাথাভাঙ্গা হাই স্কুলের মেয়েদের জন্য ৪৮৫ টাকা ও ছেলেদের জন্য ৫২৫ টাকা, খোলটা হাইস্কুলে ৫৫০ টাকা, রাজারহাট হাইস্কুলে  ৪০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে।

মাথাভাঙ্গা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চৈতন্য পোদ্দার বলেন, 'মেয়েদের জন্য ৪৮৫ টাকা ও ছেলেদের জন্য ৫২৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তাতে অবশ্য বেল্ট, ব্যাচ , টাই,সরস্বতী পূজার খরচ ইত্যাদি ধরা হয়েছে। কেউ যদি বেল্ট, ব্যাচ, তাই ইত্যাদি না নেয় তাহলে তাদের কাছ থেকে শুধুমাত্র ২৪০ টাকা ও সরস্বতী পূজার জন্য ৬০ টাকা নেওয়া হচ্ছে'। শহরের অন্যতম নামকরা বালিকা বিদ্যালয় সুনীতি একাডেমির প্রধান শিক্ষিকা মনিদিপা নন্দী বিশ্বাস জানান,'আমরা ২৪০ টাকাই নিচ্ছি'।

রাম ভোলা হাই স্কুলের টিচার গৌতম দেব বলেন,  সরকারি রেট ২৪০ টাকা হলেও তারা ৬০০ টাকা করে নিচ্ছেন। বাকিটা সরস্বতী পুজো, সিকিউরিটি গার্ড, ব্যাচ বেল্ট সহ অন্যান্য বিষয়গুলিতে যোগ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি অভিভাবকরা নিজেদের অসুবিধার কথা জানায় তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে ২৪০ টাকাই নেওয়া হবে। কোচবিহার -এর  অন্যতম নামকরা সরকারি স্কুল জেনকিনস স্কুলের টিচার প্রিয়তোষ সরকার বলেন,'আমরা ৪৫০-৫০০ টাকা নিচ্ছি। স্কুলের ম্যাগাজিন, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সরস্বতী পুজো-এগুলি জন্য সরকার আমাদের টাকা নিতে বলেননি। কিন্তু পয়সার অভাবে এগুলি বন্ধ হয়ে যায়। তাই কয়েক বছর আগে অভিভাবকদের সাথে মিটিং এর মাধ্যমে ওই টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত কয়েক বছর ধরে এভাবেই চলে আসছে'।

এক অভিভাবক তার ছেলেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে ভর্তি করানোর জন্য কোচবিহার শহরের এক স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে ৮০০-৮৫০ টাকা ফি বলে জানায়। তবে সেটা এখনও চূড়ান্ত নয়।

এরপরই অভিভাবক ও শিক্ষা সংগঠনগুলি ক্ষোভে ফেটে পড়ে। জেলা সম্পাদক পরিতোষচন্দ্র সরকার ঘটনাটি নিয়ে আন্দোলনের কথা বলেন। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক মিঠুন বৈশ্য বলেন, ২৪০ টাকার বেশি যে স্কুলগুলি নিচ্ছে তারা অন্যায় করছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post